২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ব্রাজিলের মাটিতে সেদিন নেদারল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিলো আর্জেন্টিনা। গোটা ম্যাচ জুড়ে মুহুর্মুহু আক্রমন শানিয়েও গোলের দেখা পাচ্ছিলো না কোন দল। খেলার তখন একেবারে অন্তিম মুহূর্ত চলে। হুট করেই ডি বক্সের মধ্যে ভালো একটি সুযোগ পেয়ে যান ডাচদের সেরা তারকা আরিয়েন রবেন। বলটাকে একটু সামনে এগিয়ে নিয়ে নেন একটি দুর্দান্ত শট! কিন্ত বিধিবাম; পেছন থেকে ক্ষিপ্র গতিতে এগিয়ে এসে ট্যাকেল করেন আকাশী-সাদা জার্সিধারী ৩০ বছর বয়সী টেকো মাথার এক তারকা। বল তার পায়ে লেগে অতিক্রম করে টাচ-লাইন। পরে টাইব্রেকারে জিতে দীর্ঘ ২৪ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে আর্জেন্টিনা। মনে পড়ে সেই খেলোয়াড়টির নাম? তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন হ্যাভিয়ের মাসচেরানো। ৩৬ বছর বয়সে এসে সব ধরনের ফুটবল থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন আর্জেন্টিনা এবং বার্সেলোনার এই কিংবদন্তি ফুটবলার।
পেশাদার ক্যারিয়ারে তিনি রিভার প্লেট, করিনথিয়ান্স, লিভারপুল এবং বার্সেলোনার মতো দলের হয়ে মাঠ মাতিয়েছেন। সর্বশেষ স্বদেশী ক্লাব এস্তুদিয়ান্তসের হয়ে খেলছিলেন টেকো মাথার এই মহাতারকা। গতকাল আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের কাছে তার দলের পরাজয়ের পর ফুটবল থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এই মিডফিল্ড মায়েস্ত্র।
“যতটা সম্ভব আমি আমার পেশাদার ক্যারিয়ার উপভোগ করেছি। কিন্ত গত কিছুদিন যাবৎ এটাই আমার শরীরের উপর অত্যধিক চাপ সৃষ্টি করছে।” – সাংবাদিকের বলেন তিনি।
“কিছু কিছু সময় আপনি নিজে শেষ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। এটা (অবসরের সিদ্ধান্ত) নিজে নিজেই এসে যাবে।”
ক্লাব ক্যারিয়ারে সবচেয়ে সফল সময়টি তিনি পার করেছেন বার্সেলোনার হয়ে। স্প্যানিশ দলটির হয়ে ৮ মৌসুমে সর্বমোট ১৯টি শিরোপা জয়ে প্রত্যক্ষভাবে অবদান রাখেন মাসচেরানো। এর মধ্যে ছিলো ৫টি লিগ শিরোপা এবং ২টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাও!
আর্জেন্টিনার জার্সিতেও সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডও এখন পর্যন্ত নিজের করেই রেখেছেন মাসচেরানো। আকাশি-সাদা জার্সিতে মাঠে নেমেছেন মোট ১৪৭ বার! খেলেছেন চারটি বিশ্বকাপও। আর্জেন্টিনার হয়ে দুইবার অলিম্পিকের (২০০৪ এবং ২০০৮) গোল্ড মেডেল জয়ের কৃতিত্বও রয়েছে তার।