বিপিএলে মঙ্গলবার দিনের প্রথম ম্যাচে মিরপুর শেরে-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের শুরুর গল্পটা শুধুই মোহাম্মদ ওয়াসিমের। সিলেট স্ট্রাইকার্সের তিন ব্যাটরকে শুরুতে ফিরিয়ে দেন ফরচুন বরিশালের এই পেসার। তবে সে চাপ সামলে নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় সিলেট। দাঁড় করায় বড় সংগ্রহ। জবাবে জিততে জিততেও আমির-রেজার দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে হেরে গেছে সাকিবের বরিশাল। ফলে টেবিল টপার হবার লড়াইয়ে ষষ্ঠ জয়ে হেক্সা মিশন কমপ্লিট করে শীর্ষেই রইলো মাশরাফির সিলেট।


এই জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরো মজবুত করলো সিলেট। অন্যদিকে ১০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানেই আছে বরিশাল।
এদিন আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৭৩ রান। শান্ত অপরাজিত থাকেন ৮৯ রানে। জবাবে ৮ উইকেটে ১৭১ রান তুলতে সক্ষম হয় ফরচুন বরিশাল। ফলে ২ রানের জয় পায় মাশরাফিরা।
শেষ ওভারে ফরচুন বরিশালের প্রয়োজন দাঁড়ায় ১৫ রানে। বোলিংয়ে আসেন রেজাউর রহমান রাজা। ওয়াইড দিয়ে শুরু করে শঙ্কার মাত্রাটা বাঁড়িয়ে দেন। কেননা স্ট্রাইকে দাঁড়িয়ে যে পাকিস্তানি হার্ড-হিটার ইফতিখার আহমেদ। তবে ইফতিকে প্যাভিলনে ফেরত পাঠান, পরের বলে মিরাজকেও। কিন্তু শেষ বল অবধি শঙ্কা ছিল জয় নিয়ে। সেই শঙ্কাকে হারিয়ে বরিশালের বিপক্ষে ২ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় পায় মাশরাফী বাহিনী।
১৭৪ রানের লক্ষ্যে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং চালায় বরিশাল। পাওয়ার প্লেতে বড় সংগ্রহের দিকেই এগোচ্ছিল তারা। তবে পঞ্চম ওভারে সিলেট অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বোলিংয়ে নিয়ে আসেন অভিষিক্ত তানজিম সাকিবকে।
তবে বিপিএল ক্যারিয়ারের প্রথম চার বলেই ১০ রান হজম করে ফেলেন তিনি। পঞ্চম বলে আর হতাশ হতে হয়নি তাকে। টুর্নামেন্টে তার করা প্রথম ওভার থেকেই উইকেট শিকার করে নেন। ভয়ঙ্কর হয়ে উঠা সাইফ হাসানকে ফেরান তিনি। নিজের প্রথমের সঙ্গে দলকেও এনে দেন ব্রেক থ্রো। ফেরার আগে সাইফ ১৯ বলে করেন ৩১ রান করেন। তার ব্যাট থেকে আসে চারটি ছক্কার মার।
নিজের পরের ওভারে এসে সাকিব ফেরান এনামুল হক বিজয়কে। নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বরিশালকে টেনে তুলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও ইব্রাহিম জাদরান। দুজনে মিলে গড়ে তুলেন ৬১ রানের জুটি। সেই জুটি ভাঙেন রেজাউর রহমান। চৌদ্দতম ওভারের তৃতীয় বলে ইব্রাহিমকে, শেষ বলে সাকিব আল হাসানকে বোল্ড করেন তিনি। ইব্রাহিম ফেরার আগে চার বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায় ৪২ রান করেন। এছাড়া ১৮ বল খেলে সাকিব করেন ২৯ রান।
এদিন আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে সিলেট দল। শুরুতে বিদায় নেন জাকির হাসান কোনো রান না করেই। এরপর আবারো সিলেট শিবিরে আঘাত হানেন ওয়াসিম, ফিরিয়ে দেন তৌহিদ হৃদয়কে ৪ রান। দলীয় ১৫ রানে সিলেটের তারকা ব্যাটার মুশফিকুর রহিমকেও গোল্ডেন ডাকে ফেরান ওয়াসিম।
তবে এরপরের গল্পটা শুধু শান্ত-টম মরিসের। কেননা এই জুটি থেকে তারা সংগ্রহ করে ৮১ রান। তবে ব্যাক্তিগত ৪০ রানে মরিসকে ফিরিয়ে দেন সাকিব আল হাসান। তখনো অবিচল ছিলেন শান্ত। বরিশাল বোলারদের করেছেন একের পর এক সীমানাছাড়া। শেষ দিকে থিসারা পেরেরা করেন ২১ রান।
শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি না হলেও শান্ত অপরাজিত থাকেন ৬৬ বল খেলে ৮৯ রানে। বরিশালের হয়ে মোহাম্মদ ওয়াসিম নেন ৩ উইকেট এছাড়া সাকিব আল হাসান এবং কামরুল ইসলাম রাব্বি নেন ১ উইকেট করে।