প্রেম ব্যাপারটাই নাকি এরকম। কোনোরকম বাঁধা মানতে চায় না। সেটা ভৌগলিক বাঁধা হোক বা অন্য কোনোকিছু হোক। যে কারণে বৈরি রাজনৈতিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের মধ্যে প্রায়শই প্রেম এবং বিয়ের মতো সম্পর্ক গড়ে উঠতে দেখা গিয়েছে। ক্রিকেটাররাও এক্ষেত্রে বাদ যাননি। এ পর্যন্ত চারজন পাকিস্তানি ক্রিকেটারকে ভারতের মেয়েকে বিয়ে করতে দেখা গিয়েছে। এই চার জুটির গল্প নিয়েই আজকের প্রতিবেদন।








































































মহসিন খান ও রিনা রায়
সেবারই হয়তো প্রথমবার কোনো পাকিস্তানি ক্রিকেটার ভারতের কোনো মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। আশির দশকের ঘটনা এটা। পাকিস্তানি ক্রিকেট দলের সেসময়কার অন্যতম সেরা ক্রিকেটার মহসিন খান প্রেম করে বিয়ে করেন বলিউডের অভিনেত্রী রিনা রায়কে। অবশ্য বিয়ের পরই পাকিস্তানের জার্সি আলমারিতে ভাঁজ করে রেখে অভিনয়ে নাম লিখিয়েছিলেন মহসিন খান। এদিকে রিনা রায়ও তার ক্যারিয়ার বিসর্জন দিয়ে ঘর-সংসারে মনোযোগ দেন। তবে এই দম্পতির সাংসারিক জীবনের শেষটা সুন্দর ছিল না। কেননা, শেষ পর্যায়ে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। অবশ্য এই দম্পতির একটি কন্যা সন্তানও আছে। মহসিন তাকে জান্নাত বলে ডাকলেও রীনার বোন তাকে ডাকেন সোনম নামে।








































































জহির আব্বাস ও রীতা লুথারা
এবারো আশির দশকের ঘটনা। এশিয়ার ব্রাডম্যান নামে খ্যাত পাকিস্তানের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান জহির আব্বাসের বিয়ে হয় ভারতীয় বংশদ্ভূত ইংলিশ মেয়ে রীতা লুথারার সঙ্গে। গ্লুস্টারশায়ারের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে গিয়ে একদিন হঠাৎ করেই ইন্টেরিয়র ডিজাইনের ছাত্রী রীতার সঙ্গে জহিরের পরিচয়। এরপর প্রেম, প্রেম থেকে বিয়ে। অবশ্য ১৯৮৮ সালে বিয়ের সময় রীতা ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হয়ে যান। নাম হয় সামিনা আব্বাস। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে এখনো ক্রিকেটের সঙ্গে জহির আব্বাসের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছে। একটা সময় আইসিসির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। বর্তমানে এই সুখী দম্পতি থাকেন করাচিতে। সেখানে ইন্টেরিয়র ডিজাইনের বিশাল ব্যবসাও করছেন সামিনা।








































































শোয়েব মালিক ও সানিয়া মির্জা
তাঁরা দুইজনই ক্রীড়া জগতের দুইটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিশ্ব এই নক্ষত্রদ্বয়ের মিলন দেখেছিল ২০১০ সালে। কাকতালীয়ভাবে ঐ বছরের সেই সময়টায় দুইজনই অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শোয়েব মালিকদের তখন টেস্ট সিরিজ চলছিল। আর সানিয়াও তখন কোনো টেনিস টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েছিলেন। সেখানেই পরিচয়, এরপর প্রেম । অবশ্য প্রেম নিয়ে গুঞ্জন সৃষ্টির সুযোগ না দিয়ে অল্প দিনের মধ্যেই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। এদিকে সম্প্রতি তাঁদের কোল আলোকিত করে জন্ম হয়েছে এক পুত্র সন্তানের। এই দম্পতির দাম্পত্য জীবনও বেশ সুখের মধ্যদিয়েই কাটছে। কেননা, তাঁরা দুইজনই একে অন্যের প্রতি সবসময়ই অকুন্ঠ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।








































































হাসান আলী ও শামিয়া আরজু
শামিয়া আরজুর পুরো পরিবারেরই বসবাস ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। তিনি পেশায় একজন ফ্লাইট প্রকৌশলী। কাজ করেন বিখ্যাত বিমান সংস্থা এমিরেটসে। পেশাগত কারণে দুবাইতে প্রায়শই যেতে হয় শামিয়াকে। আর লম্বা একটা সময় দুবাইকেই নিজেদের হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করেছে পাকিস্তান। সে কারণে তাঁদের দেখাসাক্ষাৎ হওয়ার ব্যাপারটা অনেকটা স্বাভাবিকই ছিল। চুটিয়ে প্রেম করার পর গত আগষ্টে তাঁরা একে অপরের জীবনসঙ্গীতে পরিণত হয়েছেন। বর্তমানে তাঁদেরও সাংসারিক জীবন বেশ দারুণভাবে কাটছে৷